শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড ইনভারমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সেন্টার ফর রিসার্চ টেস্টিং এন্ড কনসালটেন্সি (সিআরটিসি) উদ্যোগে তিনদিনব্যাপি ‘ক্লায়েন্ট সামিট ২০২০’ এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শনিবার বিকেলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ‘সিলেট শহরে বিল্ডিং নির্মাণ কোড অনুসরন করার ক্ষেত্রে শাবি আমাদেরকে সহযোগিতা করতে পারে। আমার সন্দেহ হয় সিলেটে যে ভবনগুলো আছে তা আদৌও প্ল্যান মাফিক হয়েছে কিনা, বাসার প্ল্যান নিয়ে জরিপ করা হলে সিলেটের একটি ভবনও টিকবে না। আমরা অনেক সময় দেখি বাড়ি বানানোর সময় একভাবে অনুমোদন নেয় আর বাড়ি বানায় অন্যভাবে।’
আরিফুল হক চৌধুরী আরো বলেন, আমরা নগরীকে আরো উন্নত করার জন্য মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নিয়ে যাচ্ছি। এজন্য সবাই প্রশংসাও করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই লাইনগুলো সংরক্ষণের জন্য কোনো ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয় নি। মাটির নিচে লাইন থাকায় যেমন নগরীকে আরো সুন্দর দেখাবে তেমনি এর জন্য দিনদিন উদ্বেগও বাড়ছে। লাইনগুলোকে রেড কালার বা কোনো ধরনের চিহ্ন না দিয়ে চিহ্নিত না করার কারণে অনেক সময় নাগরিকগণ অসচেতনতার অভাবে বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।
মেয়র বলেন, মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া কোন কিছুরই উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদেরও একটি মাস্টারপ্ল্যান ছিল। কিন্তু সিলেটের আগের মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী যা আছে তা রিভাইজ করা হচ্ছে। কেননা সিলেটের সার্বিক বিষয় চিন্তা করে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী আমাদের মাস্টারপ্ল্যান চেঞ্জ করতে বলেছেন। আমরা সেই অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গাতে কাজ করছি। তবে কতটুকু টেকসই হবে, এ পরিবর্তন কতটুকু কাজে আসবে জানি না। তবে এটি স্থায়ী সমাধান নিয়ে আসতে না পারলেও আশাকরি সাময়িকভাবে মাস্টারপ্ল্যানের পরিবর্তন সিলেটে উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচন করছে। এসময় সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি সিলেটকে গ্রীন সিটি করার স্বপ্নের কথা জানান মেয়র।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপান ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার প্রিভেনশন এন্ড আরবার সেফটি (জিডপাস) এর পরিচালক অধ্যাপক ড. রাকিব আহসান বলেন, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য প্রকল্প রয়েছে। প্রত্যেক প্রকল্পে কোন কোন সমস্যা থাকেই। মূলত প্রকল্পগুলো যখন পরিকল্পনা করা হয় তখনই সমস্যাগুলো বের করে নিয়ে আসা যায় তাহলে তার একটি স্থায়ী সমাধান পাওয়া যাবে। আমরা দেখেছি, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একেকটি প্রকল্পে কয়েক’শ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে। এর মধ্যে থেকে গবেষণার জন্য কি কয়েক লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা যায় না! আমি মনে করি অল্প কিছু গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হলে প্রকল্পগুলো আরো টেকসই হবে। দেশ এগিয়ে যাবে।
এসময় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বড় বড় প্রকল্প পরিকল্পনা গ্রহণের সময় গবেষণায় বরাদ্দ রাখার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে সিইই বিভাগের সিআরটিসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজিজুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড সাইন্সেস এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুশতাক আহমেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সিআরটিসি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম। এছাড়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও সিইই সিআরটিসির সমন্বয়ক ড. মো. ইমরান কবির।
অনুষ্ঠানে সিইই সিআরটিসি’র সাথে সর্বোচ্চ সম্পৃক্ত থাকায় ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল ক্লায়েন্ট’ হিসেবে চার ক্যাটাগরিতে চারটি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। তন্মেধ্যে ‘এনভায়রনমেন্টাল কোয়ালিটি অ্যাসেসমেন্ট’ ক্যাটাগরিতে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং মেটারিয়াল অ্যাসেসমেন্ট’ ক্যাটাগরিতে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), ‘জিয়োটেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট’ ক্যাটাগরিতে ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড এবং ‘কনসালটেন্সি’ ক্যটাগরিতে টিএসসিও পাওয়ার লিমিটেডকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এছাড়া ‘স্মাট ল্যাব অটোমেশন সার্ভিস’ চালতে বিশেষ অবদান রাখায় টেকনেক্সট লিমিটেডকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।